৫৫ বছরের এক বয়স্ক পুরুষের সঙ্গে প্রেম করি, আমার বয়স ২৫ তাই সবাই খোঁটা দেয়, আমি কী দোষ করেছি?
এই কথা ঠিক যে, পৃথিবীতে প্রতি পদক্ষেপের জন্য কোনও না কোনও কারণে আপনাকে কথা শুনতেই হবে। কেউ না কেউ আপনাকে জাজ করবেই বা বিচার করবে। এর মধ্যে নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যথেষ্ঠ কঠিন। আপনার ব্যক্তিগত পছন্দের জন্য ও জীবনশৈলীর জন্য আপনাকে বিচার করা হবেই। আপনার ব্যক্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠবেই। আপনি কোথায় যাচ্ছেন, কার সঙ্গে কথা বলছেন, এসব কিছু নিয়েই মানুষ আপনাকে প্রশ্ন করবে, কথা শোনাবে।
বিশেষ করে আপনি যদি মহিলা হন, তাহলে এই পরিবেশ আপনার জন্য আরও কঠিন হয়ে উঠতে পারে। সবাই কোনও না কোনও পদক্ষেপে আপনাকে কথা শোনানোর জন্য প্রস্তুত হয়ে থাকবে। তবে এসব কিছু নিয়েই আপনাকে এগিয়ে চলতে হবে। থমকে গেলে চলবে না। আজ এরকমই এক সমস্যার কথা শেয়ার করেলন একজন মহিলা ।
* এভাবেই শুরুল হয়েছিল সব
আমি নিজের পছন্দমতো ভালোবাসার মানুষ খুঁজে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। আর তা যেন আমার চারপাশের মানুষদের আরও বেশি রাগিয়ে দিয়েছিল। আমার আগের অফিসে এরকমই অভিজ্ঞতা হয়েছিল আমার। সেই কথা জানাব। আমি আগে যে অফিসে কাজ করতাম, সেখানে একজন হ্যান্ডসাম ব্যক্তির প্রেমে পড়ি আমি। তাঁর বয়স ছিল ৫০-এর বেশি।
বলা ভালো, ৬০-এর কাছাকাছি। তা দেখেই আমি প্রেমে পড়ে যাই। তাঁকে দেখে বেশ ধনী মনে হয়েছিল। আর খুব মিষ্টি করে কথা বলতেন তিনি। শুধু আমাদের বয়সের পার্থক্য ছিল অনেক বেশি। সেটাই বড় সমস্যা তৈরি করেছিল। আমার মধ্য়েও সেই নিয়ে দ্বন্দ্ব চলত।
আমি যদিও তাঁর আঙুলের দিকে বারবার তাকাতাম। তাঁর হাতে কি বিয়ের আংটি আছে? কিন্তু দেখতে পাইনি। কিন্তু আর এগোইনি। ভেবেছিলাম, হয়তো কোনওদিন তাঁর কাছাকাছিও পৌঁছোতে পারব না।
* অফিসে প্রায় ৬০ বছরের একজন পুরুষের প্রেমে পড়ি
অফিসে যাঁকে পছন্দ হয়েছিল, এখন তাঁর কথাই বলব। তিনি আমাদের কোম্পানির ক্লায়েন্ট ছিলেন। একাধিকবার আমাদের একে অপরের চোখে চোখ পড়ে গিয়েছিল। তিনি ভীষণ হ্যান্ডসাম ছিলেন। এমনকী তিনি স্টাইলিশও ছিলেন। তাঁর ব্যক্তিত্ব দেখে আমি আরও দুর্বল হয়ে পড়তাম। আমাদের মিটিংয়ে একে অপরের সঙ্গে কথা বলতাম আমরা। এভাবেই চলতে থাকে।
এক সময় গিয়ে বুঝতে পারি, আমার হয়তো তাঁর উপর কোনও অনুভূতি আছে। এরপর তিনি আমায় ডিনারের জন্য আমন্ত্রণ জানান। এরপর থেকেই আমরা একে অপরের কাছাকাছি আসতে শুরু করি।কয়েক মাস আগে তিনি আমায় সম্পর্কের প্রস্তাব দেন। জানান, তিনি আমায় প্রেমিকা হিসেবে চান। আমি খুশি হয়ে তাঁকে হ্যাঁ করি। প্রস্তাবে সম্মতি জানাই।
আমার জীবন, তাই আমি নিজের মতো চালাতেই পারি। তিনি ডিভোর্সি ছিলেন। তাঁর স্ত্রী তাঁকে অন্য কারও জন্য ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। এখন তিনি তাঁর জীবন নতুন করে গড়ে নিতে চান। আমি এরকম কারও সঙ্গে কীভাবে না থাকতে পারি? কারণ, তিনি আমায় প্রতিদিন ইনস্পায়ার করেন। আমাদের সম্পর্ক ছিল ভীষণ মিষ্টি। আবার কখনও ঝগড়াও হত। কিন্তু আমাদের সম্পর্ক ছিল একদম নিজেদের মতো।
* আমায় পয়সালোভী বলে
কিন্তু আমাদের সম্পর্ক অন্যরা ভালোভাবে নেননি। এমনকী মানুষ আমায় ‘পয়সালোভী’ বলেও বিদ্রুপ করেছিল। আমি তা জানতে পেরেছিলাম। অফিসে সব সময়ই আমায় নিয়ে এরকম আলোচনা চলত। প্রতি মুহূর্তে তাঁদের এই ধরনের কথা আমায় খুব আঘাত করত।
* প্রথমে পরিবারের সমর্থন পাইনি-
প্রথমে, আমার পরিবার এই সম্পর্কটা মেনে নেয়নি। কিন্তু পরে তাঁরা আমাদের একে অপরের প্রতি ভালোবাসা নিজের চোখেই দেখেছে। তাঁরা বুঝেওছিলেন যে, আমরা একে অপরের কথা কতটা ভাবি। সহমতও হয়েছিলেন। আমার বাবা মা সব সময় আমায় সমর্থন করেছিল।
কিন্তু আমার পিসিরা ও অন্যান্য আত্মীয় তা করেননি। বরং, উলটো পালটা কথা বলত। আমায় নিয়ে হাসিঠাট্টা করত। এই কথাও বলত যে, টাকার জন্যেই আমি ওর সঙ্গে আছি।
* আমার সম্পর্কে আমি খুশি
আমি জানি না, মানুষ কেন অন্যের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে এরকম মন্তব্য করে? কারও ভালোবাসার সম্পর্ক নিয়ে বিদ্রুপ করে। আমার তা একদম ভালো লাগে না। প্রেমের কোনও সীমারেখা থাকতে পারে না। নিজের পছন্দের জন্য কাউকে কখনও জাজ করা উচিত নয়। তাই না?
বিশেষ করে যখন প্রেমের প্রসঙ্গ আসে, তখন তো নয়ই। আমি আর কষ্ট পাই না। বরং, এই মানুষটির সঙ্গে থেকে আমি সত্যিই খুব খুশি। আমি গর্বিত নিজের পছন্দ নিয়ে। নিজের ভালোবাসা নিয়ে আমার মনে কোনও দ্বন্দ্ব নেই।
No comments:
Post a Comment